সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

ad

সৈয়দ মাহবুব যেভাবে হলেন দেওয়ানবাগী পীর


রাজধানীর আরামবাগে দেওয়ানবাগ এর পীর সৈয়দ মাহবুব-এ খোদা ওরফে দেওয়ানবাগী মারা গেছেন। তিনি সারা দেশে ‘দেওয়ানবাগী পীর হিসাবে’ পরিচিত ছিলেন। সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে সাতটার দিকে তিনি নিজ বাসায় স্ট্রোক করেন। পরে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেওয়ানবাগ দরবার শরীফের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী তার পুরো নাম ‘মাহবুব-এ খোদা’। তবে ভক্তদের কাছে তিনি ‘দেওয়ানবাগী’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। বাংলাদেশে তার বড় একটি ভক্ত শ্রেণি রয়েছে। যারা তাকে বিশ্বাস করতেন মনে প্রাণে। তার বেশ কিছু বক্তব্য বিভিন্ন সময় বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছে। তবে সে তার কার্যক্রম চালিয়ে গিয়েছে নিজ ‘ক্ষমতার বলে’।


দেশের ইসলামপন্থীদের কেউ কেউ তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছিলেন। এমনকি রাস্তায় তাকে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলও হয়েছিল। এবং তারা বিভিন্ন সময় অভিযোগ করেন যে, দেওয়ানবাগীর পীর হিসাবে পরিচিত সৈয়দ মাহবুব ও তার পরিবারের সদস্যরা ‘সৃষ্টিকর্তাকে দেখতে পান’ বলে দাবি করেন। এছাড়াও ইসলামের বিভিন্ন বিষয় ও ইসলামের নবীকে নিয়েও তিনি বিতর্কিত মন্তব্য করেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে কয়েক বার।
তবে তার একজন মুরীদ আবদুল মান্নান বলছেন, আত্মশুদ্ধির জন্য আমরা তার কাছে এসেছি। তার ভক্ত হয়েছি। তার কাছ থেকে আমরা অনেক শিক্ষা পেয়েছি, তাই তার মুরীদ হয়েছি। তিনি অনেক বই লিখেছেন, সংস্কার করেছেন।
দেওয়ানবাগী পীরের বিতর্ক বিষয় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মান্নান বলেন, ধর্মীয় নেতাদের অনেকেই তাকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা মনে করি তার অবস্থান ঠিক এবং সে কারণে সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশায় তার অনেক ভক্ত তৈরি হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, ‘উল্টাপাল্টা ফতোয়া দিয়ে তার উত্থান হয়েছে। ইসলামকে কাটছাট করেছেন তিনি। তিনি বেহেস্ত দিয়ে দেবেন, আল্লাহকে দেখেছেন, এসব বলে মানুষকে ধোঁকা দিয়েছেন। আসলে মানুষ তো অন্ধ ভক্ত। বাঙালিরা অনেকে বেশি হুজুগে নামছে। এই জন্য তার ভক্ত হয়েছে’।
দেওয়ানবাগী পীরের বেশ কয়েকবার তার ভক্তদের সঙ্গে অন্যদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। তবে তাদের দরবার শরীফের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
পীর মাহবুব-এ খোদা ওরফে দেওয়ানবাগী ১৯৪৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানকার তালশহর কারিমিয়া আলিয়া মাদরাসা থেকে ফাজিল পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। ফরিদপুরের চন্দ্রপাড়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা আবুল ফজল সুলতানা আহমেদ চন্দ্রপুরীর মেয়ে হামিদা বেগমকে বিয়ে করেন।দেশের বিভিন্ন  গণমাধ্যম এ খবর প্রকাশ করেছে।
এর কিছুদিন পরে নিজেই নারায়ণগঞ্জে দেওয়ানবাগ নামের একটি স্থানে আস্তানা তৈরি করেন এবং নিজেকে সুফি সম্রাট হিসাবে পরিচয় দিতে শুরু করেন। সেখান থেকেই তার নামের সঙ্গে দেওয়ানবাগী শব্দটি যুক্ত হয়। তারপর থেকে সারা দেশে তার ভক্ত তৈরি হয়। নারায়গঞ্জ থেকে রাজধানীর মতিঝিলে ১৪৭ আরামবাগে স্থায়ী দরবার গড়ে তুলে কার্যক্রম শুরু করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ