সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

ad

স্বামীর অজান্তে একই বাড়িতে প্রেমিককে লুকিয়ে রাখেন ১৭ বছর

 অতঃপর



আপনার প্রিয়জনের স’ঙ্গে দেখা করার জন্য কি পরীক্ষা দিতে পারবেন? বড় জোর বাসায় মিথ্যা কথা বলে দেখা করতে যেতে পারবেন!

তাই বলে কি আপনি বছরের পর বছর ধরে প্রেমিককে ঘরে লুকিয়ে রাখতে পারবেন? ভাবতে অবাক লাগলেও এমনই এক সাহসিকতার কাজ করেছেন এক নারী। স্বামীর চোখ ফাঁ’কি দিয়ে একই বাড়িতে তিনি লুকিয়ে রাখেন প্রেমিককে। তাও আবার ১৭ বছর ধরে!


ডলি অস্ট্রেইস ১৮৮০ সালে জার্মানির একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বয়স যখন ২০ বছর তখন তার খুব ধনী একজন টেক্সটাইল মালিকের স’ঙ্গে বিয়ে হয়। যার নাম ফ্রে’ড উইলিয়াম অস্ট্রেইস।

এত প্রাচুর্যের পরও ডলি তার দাম্পত্য জীবনে সুখী ছিলেন না। কারণ তার স্বামী ছিলেন ম’দ্যপ। তাই তিনি তার দাম্পত্য জীবনে কখনো সুখ পাননি। ১৯১৩ সালে ডলির জীবনের সব যেন পরিবর্তন হয়ে যায়।

শরতের এক সকালে ডলি তার স্বামীকে বলেন, সেলাই মেশিন ঠিক করার জন্য কারখানা থেকে একজন মিস্ত্রীকে বাড়িতে পাঠাতে। ঠিক যেমন বলা তেমন কাজ।

ফ্রে’ড তার অফিসের একজন ১৭ বছরের যুবককে এ কাজের জন্য তার বাড়িতে পাঠালেন। আর সেই কর্মচারীর নাম ছিল অটো সানহুবার। সে ঠিক সময় মতোই পৌঁছে যায় ফ্রে’ডের বাসায়। যখন বাসায় পৌঁছে যায় ৩৩ বছর বয়সী ডলি দরজাটি খুলেন।

দরজা খুলতেই সানহুবারকে ভালো লেগে যায় ডলির। নানা কৌশলে যুবক সানহুবারকে আকর্ষিত করার চেষ্টা করেন ডলি। অতঃপর তিনি সফলও হন। সেদিন থেকেই তাদের সম্পর্ক শুরু হয়। প্রথম দিকে তারা দেখা করতেন হোটেলে। তবে এভাবে দেখা করলে সমস্যা ‘হতে পারে ভেবে তারা বেশ সাবধান হয়ে যান।

অতঃপর তারা ভাবেন ফ্রে’ডের বাসাতেই তারা শারীরিক সম্পর্ক নিয়মিত চালাবেন। তবে ১৯১৩ সালে আমেরিকা আজকের মতো ছিল না। তাইতো ডলির প্রতিবেশীরা বি’ষয়টি নজরে রাখেন। তারা বরাবরই ডলি এবং অটোর সম্পর্ক সন্দে’হের চোখে দেখতেন। এমনকি তাদের প্রতিবেশী ফ্রে’ডকে জানিয়ে দিয়েছিলেন ডলি এবং সানহুবারের সম্পর্ককে।

এই সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য ডলি সানহুবারকে তার চাকরি ছেড়ে দিতে বলেন। অতঃপর সানহুবারকে বুঝিয়ে শুনিয়ে ডলি তার বাড়িতেই লুকিয়ে রাখার ব্যবস্থা করেন।

ডলির স্বামী কখনোই চিলেকোঠায় যেত না। আর তাই বু’দ্ধিমতী ডলি চিলেকোঠায় সন্তর্পনে লুকিয়ে রাখলেন প্রেমিককে। ফ্রে’ডের চিলেকোঠায় প্রায় পাঁচ বছর ধরে এভাবেই লুকিয়ে ছিলেন সানহুবার। তিনি ডলির স’ঙ্গে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্কে লি’প্ত ছিলেন।

এদিকে ফ্রে’ডেরও সন্দে’হ ‘হতে থাকে। কেননা তিনি চিলেকোঠা থেকে অদ্ভুত সব শব্দ শুনতে পেতেন। এমনকি রাতের বেলায় তার বেডরুমের বারান্দায় ছায়াও দেখতে পেতেন। এসব ভুতুড়ে ঘটনা দেখে সে বছর ফ্রে’ড লস এঞ্জেলসে চলে যাওয়ার সি’দ্ধান্ত নেন।

ডলি ও তার স্বামীর স’ঙ্গে যেতে রাজি হয়ে যান। তবে তার একটি শর্ত ছিল। নতুন বাসায় চিলেকোঠা থাকতে হবে। এদিকে ডলি সানোয়ারকে আগে সেখানে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। ডলি ও ফ্রে’ড দম্পতি নতুন বাসায় যাওয়ার আগেই সানহুবার সেখানে নিজের ঘর গু’ছিয়ে নিয়ে বসবাস শুরু করেন।

লস অ্যাঞ্জেলসে যাওয়ার পর ফ্রে’ড ও ডলির মধ্যকার দাম্পত্য সম্পর্ক আরো খারাপ ‘হতে থাকে। তারা যেন দিনকে দিন একে অন্যের শত্রু হয়ে যাচ্ছিলেন। এদিকে ফ্রে’ড আরো বেশি ম’দ্যপান করা শুরু করেন। এমনকি ফ্রে’ডের ব্যবহার ও দিনকে দিন হিং’স্র ‘হতে থাকে।

২২শে আগস্ট ১৯২২ সালে তাদের মধ্যে প্রচুর ঝগড়া হয়। তাদের দুজনের মধ্যে এতটাই তর্ক হচ্ছিল যে, ডলির প্রাণনাশের আশঙ্কায় তার প্রেমিক চিলেকোঠা থেকে ফ্রে’ডের অ’স্ত্র নিয়ে দুজনের মধ্যে এগিয়ে আসেন। তিনি সরাসরি ফ্রে’ডের বুকে তিন রাউন্ড গু’লি ছোড়েন।

ফ্রে’ড স’ঙ্গে স’ঙ্গেই মা’রা যান। এরপর এই ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য ডলি এবং সানহুবার একটি ঘটনা সাজান। ডলি সানহুবারকে বলেন তাকে ঘরে আট’কে রাখতে যাতে সবাই ভাবে আততায়ী ফ্রে’ডকে গু’লি করে ডলিকে আট’কে রেখে চলে গিয়েছে।

সানহুবার ডলির কথা মতো সব কাজ করেন। স’ঙ্গে ফ্রে’ডের হাত থেকে ডায়মন্ডের আংটি ও চেনটি সানহুবার নিয়ে যান চিলেকোঠায়। প্রেমিক চিলেকোঠায় দৌড়ে পালাতেই ডলি চিৎকার করে কান্না করতে থাকেন।

তাদের বাসা থেকে এরকম উচ্চস্বরে চিৎকার শুনে তার প্রতিবেশীরা স’ঙ্গে স’ঙ্গে পু’লিশকে ফোন দেন। পু’লিশ এসে ডলিকে উ’দ্ধার করেন। পু’লিশ বা প্রতিবেশীরা কেউই ডলিকে সন্দে’হ করেননি। কারণ সে তো বন্দী অবস্থায় ছিল।

এদিকে পু’লিশ খু’নিকে খোঁজা শুরু করে আর ডলি আড়ালেই রয়ে যায়। অন্যদিকে ডলি তার স্বামীর মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের সম্পদের মালিক হয়ে যান। তিনি ভাবেন এখন তো আর সানহুবারকে দিনের-পর-দিন চিলেকোঠায় লুকিয়ে রাখতে হবে না। কারণ এখন থেকে তো সে ডলির স’ঙ্গে থাকতে পারবে।

এই ভেবে ডলি তো মহাখুশি। তবে কিছুদিন পর ডলি তার আইনজীবী হারম্যান সাফেরওর স’ঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এদিকে ডলি হঠাৎ একদিন একটি ভুল করে ফেলেন। তিনি তার স্বামীর হিরার আংটি তার প্রেমিক হারম্যানকে দেখিয়ে দেন। তিনি বলেন, এই ঘড়ি তিনি গদির নিচে পেয়েছেন।

তাই পু’লিশকে বলার দরকার নেই। এরপর ১৯২৩ সালে ডলি আবারও আরেকজনের স’ঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তার নাম ছিল রয় ক্লাম্প। ডলি তাকেও তার স্বামীর খু’নের ব্যাপারে সব বলে ফেলেন।

তবে এর কিছুদিন পরেই তার স্বামীর সম্পর্ক বেশ জটিল আকার ধারণ করে। এরপর পু’লিশ ফ্রে’ডের আসল খু’নের ব্যাপারে জানতে পেরে যান। যার ফলে পু’লিশ ডলিকে এরেস্ট করে নেন। তবে তারা কিছুতেই বুঝতে পারছিল না ডলি তার নিজেকে কীভাবে ঘরে আট’কে রাখতে পারে।

পু’লিশ রাইফেলের কথা জিজ্ঞাসা করলে ডলি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে। তাই তারা আবারও ডলিকে ছেড়ে দেয়। কারণ তাদের হাতে কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ ছিল না। কিন্তু সে সময় ডলি আরেকটি ভুল করে বসেন। তিনি হারম্যানকে সানহুবারের ঘর থেকে খাবার আনতে পাঠান।

যখন হারম্যান সানহুবারের ঘরে ঢুকে ছিল তখন তাকে দেখে সানহুবার বেশ খুশি হয়েছিলেন। কারণ সে বহু বছর ধরেই এই চিলেকোঠায় আছেন। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে অন্য কোনো মানুষের স’ঙ্গে তার কথা হয়নি। এদিকে হারম্যান সানহুবারকে দেখামাত্রই চিলেকোঠা থেকে এক লাথি দিয়ে নিচে ফেলে দেয়।

এদিকে সানহুবার ভয়ে প্রাণ বাঁচিয়ে কানাডায় চলে যান। ১৯৩০ সালের দিকে হারম্যান ও ডলির সম্পর্ক বেশ খারাপ দিকে চলে যায়। তখন হারম্যান পু’লিশকে সব কিছু বলে দেয় কারণ তাদের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গিয়েছে ততদিনে।

এদিকে লস এঞ্জে’লেস ফিরে এসেছিলেন সানহুবার। তখনই তার কাছ থেকে সেই রাইফেল উ’দ্ধার করে পু’লিশ। যে রাইফেল দিয়ে ফ্রে’ডকে হ’ত্যা করেছিল সানহুবার। তখন ডলিকেও গ্রে’ফতার করা হয়। পহেলা জুলাই ফ্রে’ডকে হ’ত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয় ডলি ও সানহুবার।

তবে এই ধরনের অ’পরাধে সীমাব’দ্ধতা ছিল সাত বছর। ফ্রে’ডের মৃ’ত্যুর পর চার বছর কে’টে যায় তাই সানহুবারকে শাস্তির বিধান বাদ দেয়া হয়েছিল। এরপর ডলিও খালাস পেয়ে যান। এরপর সে আবারো আরেকজনের স’ঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে যান।

তারা বিয়ে করে নেন। দীর্ঘ ৩০ বছর তার একস’ঙ্গে ছিলেন। ১৯৬১ সালে ডলি মা’রা যায়। এদিকে সানহুবার লস অ্যাঞ্জেলস ছেড়ে চলে যান। তবে তার এই ঘটনা জানাজানির পর লস এঞ্জেলসের সবাই তাকে ব্যাটম্যান বলেই চিনতেন।

সানহুবারের মতে, ডলি শুধু তাকে ব্যবহারই করেছেন। বছরের পর বছর সানহুবারকে দিয়ে ডলি শুধু তার নিজের যৌ’ন চাহিদা কি মিটিয়েছেন? তাকে যৌ’নদাসী হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তবে সানহুবার ডলিকে সত্যিই অনেক ভালবাসতেন।

এদিকে ডলি অন্যজনের স’ঙ্গে ঘর করলেও সানহুবার কিন্তু জেল থেকে বেরিয়েও শান্তি পাননি। আজীবন খু’নীর অ’পবাদ নিয়েই বেঁচেছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ